<p>অর্থের বিনিময়ে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), জন্ম নিবন্ধন সনদ ও কভিড-১৯ টিকা কার্ডের গোপন তথ্যসহ বিভিন্ন ধরনের নকল সনদ তৈরি করে সরবরাহ করার অভিযোগে একটি চক্রের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।</p> <p>গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নির্বাচন কমিশনের ডাটাএন্ট্রি অপারেটর মো. জামাল উদ্দিন ও লিটন মোল্লা। তাদের মধ্যে লিটন মোল্লাকে গত মঙ্গলবার বাগেরহাট থেকে ও জামাল উদ্দিনকে পাবনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে মো. জামাল উদ্দিন নির্বাচন কমিশনে ডাটাএন্ট্রি অপারেটর। তার সহায়তায় লিটন মোল্লা নির্বাচন কমিশন সার্ভার থেকে এনআইডি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতেন।</p> <p>আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য দেন সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান। </p> <p>সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা অর্থের বিনিময়ে জাল এনআইডি, হারানো এনআইডির কপি তৈরি, এনআইডির তথ্য সংশোধন, জন্ম নিবন্ধনের ডিজিটাল কপি ও নাম সংশোধন, কভিড-১৯ এর টিকা সনদ ও টিন সার্টিফিকেটের কপি তৈরি করে সরবরাহ করতেন। বিশেষ করে চাহিদামতো টাকা দিলেই নিজের তৈরি ওয়েবসাইট থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধন সনদ কিংবা কভিড-১৯ টিকার সনদ বানিয়ে সরবরাহ করতেন লিটন মোল্লা। আর তাকে এনআইডি সার্ভার থেকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতেন খোদ নির্বাচন কমিশনের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. জামাল উদ্দিন।’</p> <p>অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নজরদারী করতে গিয়ে এই চক্রের সন্ধান পায় সিটিটিসির ইন্টেলিজেন্স অ্যানালাইসিস বিভাগ। দীর্ঘদিন তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়।’</p> <p>গ্রেপ্তার দুজনের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘দেখতে হুবহু একইরকম হলেও নকল ওয়েবসাইট থেকে বানানো এসব নকল সনদ বাণিজ্যে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন লিটন। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ করে চাহিদামতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ে আদায় করতেন তারা।’</p> <p>গ্রেপ্তারকৃতরা কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত নিতেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তারা গ্রাহক সংগ্রহ করতেন। এরপর চাহিদা অনুযায়ী লিটন নিজের তৈরি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এসব জাল সনদ তৈরি করে গ্রাহকদের দিতেন। তিনি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা নিতেন।’</p> <p>এক প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসির প্রধান বলেন, ‘এই প্রতারক চক্রের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মরত কিছু অসাধু কর্মচারী জড়িত আছেন। চক্রে আর কারা জড়িত, তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।’ এ ঘটনায় তদন্ত অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।</p>