<p>ব‌রিশাল সি‌টি কর‌পো‌রেশ‌নের (বি‌সি‌সি) সা‌বেক মেয়র সের‌নিয়াবাত সা‌দিক আব্দুল্লাহ। তি‌নি মহানগর আওয়ামী লী‌গের সাধারণ সম্পাদক। তার চে‌য়েও বড় প‌রিচয় তিনি জেলা আওয়ামী লী‌গের সভাপ‌তি সংসদ সদস আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর বড় ছে‌লে।</p> <p>প‌রিবহন ব্যবসায় সম্পৃক্ত সা‌দি‌কের বাস মা‌লিক স‌মি‌তির সদস্য পদ বা‌তিল করে তাঁর চাচা বি‌সি‌সির মেয়র আবুল খা‌য়ের আব্দুল্লাহ খোকন সের‌নিয়াবাতকে ব‌রিশাল-পটুয়াখালী বাস-মি‌নিবাস মা‌লিক স‌মি‌তির সদস করা হ‌য়ে‌ছে। য‌দিও খোকন সের‌নিয়াবা‌ত প‌রিবহন ব‌্যবসায় জ‌ড়িত নন।</p> <p>বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান খোকন সেরনিয়াবাত। তখন বাস মালিক সমিতির সভাপতি মমিন উদ্দিন ওরফে কালু আর সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন ছিলেন সাদিক আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ঠজন। ভোটের আগেই বরিশাল-পটুয়াখালী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির অধীন বাস টার্মিনাল দখলে নেয় সাদিক আব্দুল্লাহর বিরোধী পক্ষ। এই দখলের নেতৃত্বে ছিলেন সুলতান মাহমুদ।</p> <p>বাস মালিক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ থাকার পরেও ২০২৩ সালের ১৯ জুন সভাপতি-সম্পাদককে বাদ দিয়ে জরুরি সভা আহবান করা হয়। সেই সভায় সুলতান মাহমুদকে সভাপতি এবং হুমায়ুন কবিরকে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে হুমায়ুন কবিরকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সেই পদে দায়িত্ব পান জসীম উদ্দিন। গত ৪ মার্চ বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের বার্ষিক বনভোজনে প্রধান অতিথি করা হয় মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহকে। মেয়র সেই অনুষ্ঠানে নবগঠিত কমিটিকে শপথবাক্য পাঠ করান।</p> <p>সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ঠজন মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০১৭ সালের দিকে বাস মালিক সমিতি নিয়ে পটুয়াখালী, বরগুনা ও ঝালকাঠিতে বিরোধ দেখা দেয়। সেই বিরোধ মেটাতেই সাদিক আব্দুল্লাহকে সদস্য পদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ২০২০ সালের সাধারণ সভায় তাঁর সদস্য পদ অনুমোদন দেওয়া হয়। সাদিক তখন সমিতির উন্নয়ন ফান্ডে এক লাখ টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে জমা করেন।</p> <p>কাওসার হোসেন শিপন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সড়ক পরিবহন আইনের আওতায় বৈধ প্রক্রিয়ায় সাবেক মেয়রকে সদস্য পদ দেওয়া হয়। কিন্তু সমিতির বর্তমান সভাপতি অবৈধভাবে সাদিকের সদস্য পদ বাতিল করেন। পাশাপাশি সম্পূর্ণ অবৈধ প্রক্রিয়ায় বর্তমান মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতকে সদস্য পদ দেন। বিধি অনুযায়ী, নতুন সদস্য পদ পেতে গাড়ির মালিক হতে হয়। কিন্তু মেয়রের নামে এখন পর্যন্ত কোনো গাড়ি নেই।</p> <p>সমিতির বর্তমান সভাপতি ও বিসিসির ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ কালের কণ্ঠকে জানান, ২৫ ফেব্রুয়ারি সমিতির জরুরি সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে ৯৭ জন সদস্যের মধ্যে ৬৭ জন উপস্থিত ছিলেন। সবার সম্মতিক্রমে সমিতিতে সাবেক মেয়র সাদিকের গাড়ির কোটা বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি বর্তমান মেয়রের নামে স্থায়ীভাবে কোটা প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত সাবেক মেয়রকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি বৈধ প্রক্রিয়ায় হয়েছে দাবি করে সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘সাবেক মেয়র মালিকদের জন্য হুমকি ছিলেন, তাই সাধারণ সভায় তাঁর সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে।’</p> <p>বর্তমান মেয়রের নামে গাড়ি নেই তবু তাঁকে সমিতির সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে, এর কারণ হিসেবে সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘তিনি সম্মানিত ব্যক্তি, মালিকদের কল্যাণে কাজ করবেন। তা ছাড়া খুব শিগগির তিনি গাড়ি কিনবেন।’</p>