<p>বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, এক দফা আন্দোলন চলমান অবস্থায় স্থানীয় সরকার নির্বাচন অপ্রাসঙ্গিক। আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র, রাজনীতি, নির্বাচনী ব্যবস্থা, মানবাধিকার ধ্বংস করেছে বলেই তাদের পদত্যাগ চেয়ে এক দফার আন্দোলন চলছে। এমতাবস্থায় উপজেলা নির্বাচনে সম্পৃক্ত হওয়ার অর্থ সরকারকে সহযোগিতা করা। যারা আওয়ামী লীগের  প্ররোচনা বা উসকানিতে নির্বাচন করবে বা সম্পৃক্ত হবে তারা আওয়ামী লীগের সহায়তাকারী হিসেবে বিবেচিত হবে।</p> <p>আজ রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন, জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল আহমেদ, জাহাঙ্গীর আলম, যুগ্ম সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিয়া, আমিনুল ইসলাম আশফাক, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল আলম, হানিফ উদ্দিন আহমদ রওনক, যুববিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুমন, যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তাক আহমেদ শাহীন, যুগ্ম সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবু নাসের সুমন, সদস্যসচিব শহিদুল্লাহ কায়সারসহ বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।</p> <p>প্রতিনিধি সভায় এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী যারা দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির লক্ষ্যে এক দফার আন্দোলন করছেন, তারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে গণতন্ত্র ও নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংসকারী আওয়ামী লীগের অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে পারেন না। যারা সরকারের ফাঁদ, এই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবেন বা অন্য যেকোনোভাবে সম্পৃক্ত হবেন তারা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতনকারী আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে চিহ্নিত হবেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দমন-নিপীড়নের শিকার হাজার হাজার নেতাকর্মীর ত্যাগ, রক্ত, শ্রম, ঘাম এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের সাথে তারা বেঈমানি করবেন।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘রাজনৈতিক সকল পরিস্থিতি ও পরিবেশ বিবেচনা করে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যারা এই সিদ্ধান্ত মানবে না, অগ্রাহ্য করবে তাদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে। এতে দলের ভেতরে-বাইরে কোনো প্রভাব পড়বে না। বরং শৃঙ্খলা অমান্যকারী বর্ণচোরা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।’</p> <p>‘আমাদের সকলকে মনে রাখতে ব্যক্তিগতভাবে আমরা কেউ বিএনপির জন্য অপরিহার্য নই, কিন্তু দেশ, জনগণ ও আমাদের সকলের জন্য বিএনপি অপরিহার্য’ উল্লেখ করে প্রিন্স বলেন, ‘আমাদের এমন কিছুই করা উচিত হবে না, যাতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়। যারা দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সরকারের ফাঁদে পা দেবেন তাদের বিরুদ্ধে দল কঠিন ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করবে না। কোথাও ভোটের আমেজ নাই, জনগণও ভোট নিয়ে চিন্তিত নয়। ৭ জনুয়ারির মতো জনগণ উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করবে।’</p> <p>সহসাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, গ্রামে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে জনসাধারণের কাছে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ অব্যাহত রাখার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি উপজেলা ও পৌর ইউনিট পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ত করে প্রতিনিধি সভা করে উপজেলা নির্বাচন বর্জন কর্মসূচি নিয়ে জনসাধারণের কাছে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, নির্লজ্জের মতো মিথ্যাচার করা আওয়ামী লীগের মজ্জাগত অভ্যাসে পরিণত হয়েছ। বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দালালীর তকমা আওয়ামী লীগ মুছতে পারবে না। আওয়ামী লীগ বিদেশি শক্তির তাঁবেদারি করে তাদের অনুকম্পা নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।</p> <p>প্রতিনিধি সভার পর কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের স্টেশন রোডে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে লিফলেট বিতরণ ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। লিফলেট বিতরণের শেষ পর্যায়ে পুলিশ বাধা প্রদান করে।</p>