<p>কেউ বলছেন বিয়ে পাগল। আবার কারোর ধারণা মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত। এমনই এক ছেলের হাতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন মা। ঘটনার পর পালিয়ে যায় ঘাতক রাসেল খান নামে ওই যুবক। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুর পৌনে ৩টায় উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার শিকার মোসাম্মৎ বানু ওই গ্রামের আতর খানের স্ত্রী। তবে রাতে পুলিশের জালে ধরা পড়ে ঘাতক রাসেল খান।</p> <p>হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে চাঁদপুর জেলা পুলিশের মুখপাত্র পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায় জানান, রাসেল খান (২৮) নামে ওই যুবক তার মা মোসাম্মৎ বানু (৬০) ও গলায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। তবে ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে ওই যুবক পালিয়ে যায়। তিনি জানান, পুলিশ ঘাতককে আটকের চেষ্টা করছে। তবে কি নিয়ে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড, তা এখনো নিশ্চিত হতে না পারলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক মাস ধরে বিয়ে করার জন্য বাবা ও মাকে চাপ দিচ্ছিল রাসেল খান নামে ওই যুবক। সে একসময় রাজধানী ঢাকায় নৈশপ্রহরীর কাজ করতো। চার বছর আগে চাকরি ছেড়ে গ্রামে ফিরে আসে রাসেল খান। তারপর থেকে বেকার। </p> <p>অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ ছিল রাসেল খান। স্থানীয়দের ধারণা যে কারণে, মেজাজ হারিয়ে মায়ের ওপর হামলে পড়ে সে। নিহতের স্বামী আতর খান জানান, তিনি ঘটনার সময় বাড়ির বাইরে ছিলেন। তার এই ছেলে রাসেল মোবাইল ফোনে তাকে জানায়, কে বা কারা মাকে মেরে ফেলেছে। তাড়াতাড়ি বাড়িতে আসেন। তারপর থেকে রাসেলের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ততক্ষণে বাড়ি ফিরে তারও কোনো খোঁজ পাননি তিনি। তবে শুক্রবার রাত ৯টায় পুলিশের জালে ধরা পড়ে ঘাতক রাসেল খান। এমন তথ্য জানান, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, মাকে হত্যা করে এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন রাসেল খান। এরই মধ্যে পুলিশ তার মুঠোফোন ট্র্যাকিং শুরু করে। পরে অবস্থান শনাক্ত আটক করা হয় তাকে। একই সঙ্গে যে চাকু দিয়ে মাকে হত্যা করেছিল। তাও জব্দ করে পুলিশ। পুলিশ সুপার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল খান দাবি করেন, তাকে বিয়ে না করায় বাবা ও মায়ের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। তাই সুযোগ বুঝে শেষ পর্যন্ত ঘুমন্ত মায়ের ওপর প্রতিশোধ নেন তিনি। </p> <p>এদিকে, হত্যাকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে সংশ্লিষ্ট সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ কুমার দে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, পারিপার্শ্বিক আলামত দেখে এটা নিশ্চিত যে- রাসেল খান নামে ওই যুবকই তার মাকে হত্যা করেছে। কারণ, এরইমধ্যে বেশকিছু তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করেছে পুলিশ। অন্যদিকে, পুলিশ নিহতের রক্তাক্ত মরদেহ বসতঘরে মশারি টাঙানো বিছানা থেকে উদ্ধার করেছে। পরে ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তিন বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে ঘাতক রাসেল খান সবার ছোট। তার বাবা আতর খান ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসাবাজার এলাকার একটি মাদরাসায় বাবুর্চি পদে কাজ করেন। আর ভাই এবং বোনরা বিয়ের পর এলাকা ছেড়ে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে রসেল খান সবার ছোট। তার বাবা আতর খান ফরিদগঞ্জের রূপসা বাজার এলাকায় একটি মাদরাসার ছাত্রাবাসের বাবুর্চি পেশায় কাজ করেন।</p>